শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০২:০৭ পূর্বাহ্ন
মোল্লা আজিজুল, বিশেষ প্রতিনিধিঃ বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বখতিয়ার আল মামুনের বিভিন্ন দূর্নীতি ও অনিয়মের কারনে অপসারণ চেয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
এসময় তারা ৪৮ ঘন্টার মধ্যে ডা. বখতিয়ার আল মামুনকে অপসারণ করা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুশিয়ারী দেন। স্মারকলিপি মাধ্যম করা হয়েছে বরিশাল সির্ভিল সার্জনকে।
গতকাল রোববার সকালে আগৈলঝাড়া উপজেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীরা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বখতিয়ার আল মামুনের অপসারণ চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারিহা তানজিনের পক্ষে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) উম্মে ইমামা বানিনের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
তারা স্মারকলিপিতে বিভিন্ন দুর্নীতি ও অনিয়মের কারন উল্লেখ করেন, কোভিড টিকাদান ক্যাম্পেইনের টাকা আত্মসাৎ, মাঠপর্যায় কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে কুরুচিপূর্ণ বাক্য ব্যবহারে অপমানিত করা, স্থানীয় সাবেক এমপি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ’র প্রভাব দেখিয়ে ভয় দেখানো, প্রাপ্য অর্থ দাবী করলে চাকুরী হারানোর ভয় দেখানো, তুচ্ছ কারণে অযাচিতভাবে কৈফিয়ত তলব করে হয়রানি করা, তাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা ও নারী সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক, আয়া, কাজের বুয়াদের সাথে অশ্লীল আচরণের মাধ্যমে চরিত্রহনন করার চেষ্টা করে আসছে।
এই উপজেলা হাসপাতালে ২০১৪ সালের ৭ আগষ্ট যোগদানের পর থেকেই ডা. বখতিয়ার আল মামুন বিভিন্ন ভাবে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতি ও সরকারের দেয়া বরাদ্দের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে আসছেন।
তিনি হাসপাতালের যে কোয়ার্টারে থাকেন তার বাসা ভাড়া বাবদ প্রতিমাসে ১৩,৮০০ টাকা করে সরকারী কোষাগারে জমা দেয়ার কথা থাকলেও আজ পর্যন্ত তিনি জমা দেননি। অবৈধ ভাবে টাকা কামিয়ে বরিশাল শহরে কয়েক কোটি টাকা খরচ করে দশ তলা ভবন নির্মান করছেন।
তিনি এবং তার স্ত্রীর নামে ঢাকায় রয়েছে দুই কোটি টাকার ফ্যাট।
এছাড়া আগৈলঝাড়া উপজেলার নিজ গ্রাম পয়সারহাটে রয়েছে তার কোটি টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি। উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা ও হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এই কর্মকর্তার কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন।
তিনি বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে বিভিন্ন ভাবে কর্মচারীদের জিম্মি করে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা আদায় করেন। প্রতি বছরে হাসপাতালে আসা সরকারী বরাদ্দের লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন তিনি।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. বখতিয়ার আল মামুন নিম্ন মানের সার্জিকেল সামগ্রী ক্রয়, জুনিয়র কনসালটেন্টদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ, অফিসে অনিয়মিত, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অব্যবস্থাপনা, বিভিন্ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে কাজ না করে সরকারী অর্থ আত্মসাৎ, কর্মস্থলে না এসে সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে ভুয়া বিল উত্তোলন, হাসপাতালের বড় বড় গাছ কেটে বিক্রি, অফিসে না এসে বাসায় বসে ভিজিট নিয়ে রোগী দেখাসহ স্মরকলিপিতে অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
স্মারকলিপি প্রদানের সময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, হিমেল তালুকদার, নাজমুল ইসলাম জনি, মাহাবুব হাওলাদার, ইমরান সরদার, লামিয়া আক্তার, মারুফা আক্তার, প্রলয় কর্মকারসহ প্রমুখ।
এব্যাপারে উপজেলা হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বখতিয়ার আল মামুন বলেন, আমার বিরুদ্ধে একটি মহল ষড়যন্ত্র করে ছাত্রদের দিয়ে এই স্মারকলিপি প্রদান করিয়েছেন। তারা স্মারকলিপিতে আমার বিরুদ্ধে যা উল্লেখ্য করেছেন তা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। ভাল কাজ করতে গেলে অনেক বাঁধার পেতে হয়।
বাংলাদেশ জনপদ
Leave a Reply