সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ০৬:৪২ পূর্বাহ্ন
উজিরপুর প্রতিনিধিঃ বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের মুন্ডপাশা গ্রামের শিশু নিশাত’র নিখোঁজ ও মৃত্যুকে কেন্দ্র করে পুরো এলাকা এখন উত্তেজিত।
পরিবার ও এলাকাবাসী দাবি করছে, এটি কোনো স্বাভাবিক দুর্ঘটনা নয়, বরং একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
অন্যদিকে অভিযুক্ত পরিবার অভিযোগ অস্বীকার করছে, আর প্রশাসনের কাছে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানাচ্ছে স্থানীয়রা।
শিশু নিশাত’র পরিবার সূত্রে জানা যায়, নিশাত প্রতিদিনের মতো নিজ বাড়ি থেকে পায়ে হেঁটে সামনে মাঠে যাওয়ার সময় নিখোঁজ হয়ে যায়।
পরিবার ও আত্মীয়স্বজন সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি করলেও দীর্ঘ সময় পর্যন্ত তার কোনো সন্ধান মেলেনি।
তিন দিন পরে তার মরদেহ উদ্ধার হলে এলাকায় শোক ও ক্ষোভের সঞ্চার হয়।
অভিযোগ ওঠে, স্থানীয় মোঃ রুহুল আমিন মুন্সি (৫০), তার ছেলে মোঃ রাতুল মুন্সি (২২) এবং স্ত্রী মোসাঃ নাছিমা বেগম (৪২) এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত।
এলাকা ও পরিবারের কয়েকজন মহিলা প্রত্যক্ষভাবে জানান, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
তাদের দাবি, শিশু নিখোঁজ হওয়ার পর থেকেই রুহুল আমিন ও তার স্ত্রী বিভিন্ন ফকির ও ওঝার কাছে নিয়ে যাওয়া এবং “শিশুটি পানিতে পড়ে আছে” বলে প্রচার করতে থাকে।
এতে করে সকলের মনে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। এ ব্যাপারে সংবাদকর্মীরা অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে, রুহুল আমিনের ছেলে ও স্ত্রী রাগান্বিত হয়ে বিভিন্ন রকম উচ্চবাচ্য ডাক-চিৎকার করেন।
তখন রুহুল আমিন অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, বরং ভুক্তভোগী পরিবারকে সহায়তা করেছেন।
তিনি জানান, শিশু নিখোঁজ হওয়ার সময় তিনি ও তার পরিবার অনেক খোজাঁখুজি করেন।
পরবর্তিতে একটি এনজিও প্রতিষ্ঠান থেকে লোন উঠাতে ৩০ হাজার টাকা সহায়তা করেছিলেন, যা পরবর্তিতে তারা শোধ করে দেয়।
প্রতিবেশী এক বাসিন্দা জানান, তিনি পুরো ঘটনা জানলেও ঘটনার সময় এলাকায় উপস্থিত ছিলেন না।
তাই বিস্তারিত কিছু বলতে পারেননি। তবে অন্যদিকে, একাধিক স্থানীয় মহিলা একমত হয়ে জানান, এটি নিছক দুর্ঘটনা নয় বরং “পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড”।
তাদের বক্তব্য অনুযায়ী, অভিযুক্ত পরিবারই এ ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে। কেননা, অভিযুক্তরা তখন “শিশুটি পানিতে পড়ে আছে” বলে পুরো এলাকায় প্রচার করতে থাকে।
ঘটনার পর থেকে শিকারপুরে চরম উত্তেজনা বিরাজ করে। ভুক্তভোগী পরিবার এলাকাবাসী ও প্রশাসনের কাছে জোর দাবি তুলে বলেন, নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য উদঘাটন করতে হবে এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
বর্তমানে পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ঘটনার খোঁজ নিচ্ছে।
ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসীর একটাই দাবি-নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে শিশু নিশাতের সুবিচার নিশ্চিত করতে হবে।
বাংলাদেশ জনপদ
Leave a Reply