বৃহস্পতিবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৪৮ পূর্বাহ্ন
উজিরপুর প্রতিনিধিঃ বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলার সাতলায় ইউপি চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদারের নির্দেশে আসাদ বাহিনী রাতের আঁধারে তান্ডব চালিয়ে কোটি টাকার ক্ষতিসাধন করে, প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসী।
১৭ মার্চ বেলা ১১ টায় পশ্চিম সাতলা গ্রামে ভুক্তভোগী সাবেক ইউপি সদস্য রুবেল বালী ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ ইদ্রিস হাওলাদারের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন শাহাদাত বালী, সেলিম বালী, রুবেল হাওলাদার, গিয়াস মিয়া,ইসাহাক বালী,হাফিজুর মিয়া,মাফিজুল বালিসহ শত শত নারী-পুরুষ।
উল্লেখ্য ২০ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ১০ টায় রুবেল বালী, ইদ্রিস বালীসহ একাধিক ভূমি মালিক তাদের নিজস্ব অর্থায়নে নিজেদের ভোগদখলীয় জমিতে চলাচলের রাস্তা নির্মাণের কার্যক্রম শুরু করলে ওই এলাকার আসাদ হাওলাদার, সোহেল হাওলাদার, ইলিয়াস হাওলাদার, মুফাত হাওলাদার, খলিল হাওলাদার, শাওন ভট্রি, কাইয়ুম ভট্রি, ফেরদৌস হাওলাদার, কিবরিয়া হাওলাদারসহ অজ্ঞাত ভারাটিয়া সন্ত্রাসী মিলে দেশীয় অস্ত্র সাজে সজ্জিত হয়ে মোহড়া দেয় এবং রাস্তা নির্মাণ কাজে বাঁধা দেয় এবং অতর্কিত হামলা চালিয়ে রুবেল বালীসহ কয়েকজনকে গুরুতর আহত করে।
হামলার ঘটনায় উল্লেখ্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী রুবেল বালী বাদী হয়ে উজিরপুর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
যার মামলা নম্বর ২০। সে মামলার প্রধান আসামী আসাদ হাওলাদারকে পুলিশ গ্রেফতার করে বরিশাল জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
আসামী আসাদ হাওলাদার বেশ কিছুদিন হাজতবাস করে জামিনে এসে ফের বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকি অব্যাহত রেখেছে।
এরই ধারাবাহিকতায় ১৬ মার্চ রাতে আসাদ বাহিনী রুবেল বালীর বসতবাড়ি ও মাছের ঘেরে তান্ডব চালিয়ে কোটি টাকার ক্ষতিসাধন করেছে।
এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করে ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসী।
এসময় ভুক্তভোগী রুবেল বালী,ইদ্রিস হাওলাদারসহ বিক্ষুব্ধরা বলেন,ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ শাহীন হাওলাদারের হুকুমে চিন্হিত সন্ত্রাসী আসাদ বাহিনীরা হামলা চালায় এবং আমাদের রাস্তা নির্মাণের জন্য ব্যবহ্রত ড্রেজারের ৪টি মেশিন, ট্রলারের ১টি মেশিন, জেনারেটরের ২ টি মেশিন, সেচ পাম্প ২ টিসহ ১১ টি মেশিন আগুন দিয়ে সম্পুর্ন পুড়ে ফেলেছে এবং মজুদ রাখা মুরগীর খাবার শতাধিক বস্তা মাছের ঘেরে ফেলেছে এবং কয়েক হাজার ফুট পাইপ কেটে ফেলেছে ওই সন্ত্রাসীরা।
এতে করে লক্ষ লক্ষ টাকার মাছ মরে যায়। এছাড়াও মুরগীর ফার্মে ও বসতঘর কুপিয়ে তছনছ করে আসাদ বাহিনী।
প্রায় কোটি টাকার ক্ষতিসাধন করেছে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ শাহীন হাওলাদার ও আসাদ হাওলাদারসহ জড়িতদের গ্রেফতার পূর্বক দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার।
এ ব্যপারে উজিরপুর উপজেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি মোঃ ফায়জুল হক বালী ফারাহীন জানান, চেয়ারম্যান হিসেবে শাহীন নির্বাচিত হওয়ায় পরে তার বিরুদ্ধে ৭/৮টি চাঁদাবাজি মামলা হয়েছে।
চেয়ারম্যান শাহীন এর দূর্নীতি ও অনিয়ম চরমে পৌঁছেছে। ইতিমধ্যে সে এলাকায় ভূমিদস্যু নামে পরিচিত হন।
এছাড়া এলাকায় প্রতিটি উন্নয়ন মূলক কাজে সে চাঁদা দাবি করে। চাঁদাবাজি করা তার কাছে যেন নেশায় পরিনত হয়েছে।
সাতলা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ খায়রুল বাশার লিটন জানান, ইদ্রিস হাওলাদার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি তার সুখে দুঃখে আমরা তার সাথে আছি থাকবো।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ মশিউর রহমান মিয়া জানান, বিষয়টি নিয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের নের্তৃবৃন্দদের কাছে জানানো হবে। কোন অপরাধীকে একচুল ছাড় দেয়া হবে না।
অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদার জানান, আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে তারা ক্ষমতার দাপটে সরকারি খালে বাধ দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করছে এবং নিজেরাই আগুন দিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে।
অভিযুক্ত আসাদ হাওলাদার পালিয়ে থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
উজিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ জাফর আহম্মেদ জানান,খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে, অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তীতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এদিকে ১৭ মার্চ বিকেল সাড়ে ৪টায় ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেন বরিশাল-২ আসনের সংসদ সদস্য কমরেড রাশেদ খান মেনন, উজিরপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল মজিদ সিকদার বাচ্চু, সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মোঃ গিয়াস উদ্দিন বেপারী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাখাওয়াত হোসেন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এসএম জামাল হোসেন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অপূর্ব কুমার বাইন রন্টু, সীমা রানী শীল, উজিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ জাফর আহম্মেদ।
Leave a Reply