বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:৩০ অপরাহ্ন
উজিরপুর প্রতিনিধিঃ বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলার হারতায় সরকারি সেনের খাল অবৈধভাবে জোরপূর্বক দখল করে নেয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ কতিপয় প্রভাবশালী মহল।
উপজেলার হারতা বাজারের সরকারি সেনের খালের একমাত্র ট্রলার ঘাট দখল করে একের পর এক দোকান ঘর নির্মাণ করছে অসাধুরা বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয়দের বাঁধা উপেক্ষা করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করছে হারতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অমল মল্লিক ও হারতা মৎস্য আড়ত সমিতির সভাপতি ও ইউপি সদস্য নরেন্দ্রনাথ বাড়ৈ,কৃষ্ণ বাড়ৈসহ প্রভাবশালীরা।
এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ ব্যাপারে সাবেক চেয়ারম্যান ও হারতা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সুনীল কুমার বিশ্বাস জানান,
ঐতিহ্যবাহী হারতায় অবস্থিত ট্রলার ঘাটটি শত বছর ধরে বাজারের পন্য আনা নেয়ার কাজে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
বরিশালে সাদা মাছের সর্ববৃহৎ বাজার এই হারতা মাছ বাজার।
উপজেলার জল্লা, ওটরা, সাতলা ও হারতা ইউনিয়নের শত শত ঘের ও বিল থেকে ধরা হাজার হাজার টন মাছ সেনের খালের মাধ্যমে হারতা উত্তর পাড় মাছ বাজারের ট্রলার ঘাটে আসে।
এ ছাড়া এই ঘাট থেকে বাজারের কোটি কোটি টাকার মালামাল ওঠানামা করে।
মোঃ রুবেল বেপারী চান্দিনা ভিটি লিজ নিয়েছিল। পরে তারা হারতার খাবার হোটেল ব্যবসায়ী ওয়াহিদের কাছে কয়েক লক্ষ টাকার বিনিময়ে বিক্রি করেন।
দুই বছর পূর্বে বাজার কমিটিসহ স্থানীয়দের তোপের মুখে পড়ে ভবন নির্মাণের কাজ স্থগিত করে দেন তিনি।
হারতা মৎস্য আড়ত সমিতির সভাপতি ও ইউপি সদস্য নরেন্দ্রনাথ বাড়ৈ, কৃষ্ণ ও ফারুক মিলে কিছুদিন আগে একটি কাঠের টল ঘর নির্মাণ করে।
স্থানীয়দের বাধ কাজ স্থগিত হয়। এদিকে চেয়ারম্যান এর লোকজন হঠাৎ ট্রলার ঘাটটি দখল করে বিভিন্ন প্রকার ফল ও শাকসবজির দোকান বসিয়ে পুরো ঘাটটি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়ায় ক্ষুব্ধ সচেতন মহল।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ওয়াহিদ বলেন, আমি গিয়াস ও রুবেল এর মাধ্যমে ১৮ লাখ টাকায় তাদের দু’টি চান্দিনা ভিটি দোকানের জমি কিনেছি।
সেখানে ভবন তুলতে গেলে স্থানীয়দের বাধায় কাজ স্থগিত রাখি। কিন্তু বর্তমানে ওই সেনের খাল দখল করে কাঠের টল ঘর নির্মাণ করছে প্রভাবশালীরা।
ইউপি সদস্য নরেন্দ্রনাথ বাড়ৈ বলেন, মৎস্য আড়তের সামনে রাস্তায় ছোট ছোট মাছ ব্যবসায়ীরা দখল করে রেখেছে। যার জন্য হারতা -সাতলা সড়কে দুর্ঘটনা হয়।
মৎস্য আড়ত সমিতির টাকা দিয়ে ছোট ছোট মাছ ব্যবসায়ীদের জন্য টল ঘর নির্মাণ করে দিচ্ছি।
ব্যক্তি স্বার্থে নয় জনগণের স্বার্থে। ইউপি সদস্য কৃষ্ণ বাড়ৈ বলেন,আমরা দখল করি নাই।
ট্রলার ঘাট হবে। জনগণের স্বার্থে টল ঘর হবে। চেয়ারম্যান নিজে টাকা খরচ করে বিনাস্বার্থে টল ঘর নির্মাণ কাজে সহায়তা করছেন।
শিক্ষক হরিমোহন দাস বলেন,বিল অঞ্চলের ধান, শাকসবজি ও মাছসহ কৃষিপণ্য এখানে উঠানামা করে।
কিন্তু উজিরপুর উপজেলা ভূমি অফিসের একদল অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে চান্দিনা ভিটির ডিসিআর কেটে নেন।
হারতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অমল মল্লিককে বারবার ফোন করা হলে তিনি অসুস্থ তাই কথা বলতে পারবেননা বলে জানান।
উজিরপুর ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার জালাল আহমেদ বলেন, চান্দিনা ভিটি আমার পূর্ববর্তী কর্মকর্তারা দিয়ে গেছেন।
এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারছি না। উজিরপুর উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি কে. এম ইশমাম জানান, চান্দিনা ভিটি বাতিলের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, একমাত্র জেলা প্রশাসক বাতিল করতে পারেন।
তবে সরকারি জমি অবৈধভাবে দখল করে কেউ দোকান ঘর উত্তোলন করলে তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধেপরবর্তীতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এদিকে সরকারি খালের জমি ভূমিদস্যুদের কবল থেকে মুক্ত রাখার দাবি জানিয়ে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন হারতাবাসী।
Leave a Reply