বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:৫৯ অপরাহ্ন
দুমকী (পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃ বৈষম্য বিরোধী কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে এক গণঅভ্যুথানে শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পর পটুয়াখালী জেলার দুমকী উপজেলার ৫ টি ইউনিয়নের মধ্যে ৪টি ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে বিজয়ী চেয়ারম্যানগণ আত্মগোপনে রয়েছেন।
এরা হলেন মুরাদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান শিকদার, আংগারিয়া ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ গোলাম মর্তুজা (শুক্কুর), লেবুখালী ইউপি চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম তুহিন ও পাংগাসিয়া ইউপি চেয়ারম্যান গাজী নজরুল ইসলাম।
এতে ইউনিয়ন পরিষদের সকল সেবা কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। আজ রবিবার সরোজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়ন ছাড়া চার ইউনিয়নের নৌকা মার্কার চেয়ারম্যানগণ আত্মগোপনে চলে গেছেন। কাউকেই কার্যালয়ে পাওয়া যায়নি।
বেলা বার টার দিকে মুরাদিয়া ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান শিকদারকে। তবে সচিব আবুল হোসেনকে ফোন করলে জানান একটু পরেই আসবেন তিনি।
বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে আংগারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সচিবকে পাওয়া গেলেও চেয়ারম্যান ছিলেন না দুপুর বারটার দিকে লেবুখালী ইউপি কার্যালয়ে গিয়ে চেয়ারম্যান ও সচিব কাউকেই পাওয়া যায়নি।
তবে উদ্যোক্তাকে পাওয়া গিয়েছে। পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের স্থায়ী কোন কার্যালয় না থাকায় সুবিধাজনক স্থানে কার্যক্রম চালুর কথা জানান চেয়ারম্যান। একমাত্র শ্রীরামপুর ইউনিয়নের কার্যক্রম চলমান দেখা গেছে। চার ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের সাথে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। কেউ কেউ নিরাপত্তাহীনতার কথা জানিয়েছেন।
দু একজন নিরপত্তাহীনতার কথা না বললেও নিজ কার্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন ৫ আগস্ট বা তাঁর আগে থেকেই। স্থানীয়রা জানান, ৫ আগস্টের পর কোন চেয়ারম্যানকে কার্যালয়ে দেখা যায়নি। মুরাদিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা জালাল ও মনির বলেন, হাসিনা সরকার পদত্যাগের পর চেয়ারম্যান পরিষদে আসেননি।
চেয়ারম্যান অনুপস্থিত থাকায় কাঙ্খিত সেবা পাচ্ছেন না তাঁরা। আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা আলম বলেন, ৫ আগস্টের দু একদিন আগে থেকেই চেয়ারম্যানের দেখা মেলেনি। সেবা বঞ্চিত হয়েছেন অনেকেই।
লেবুখালী ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোঃ বাবুল বলেন, পাঁচ আগস্টের পর চেয়ারম্যান কার্যালয়ে আসেননি। চেয়ারম্যানের কাজ মেম্বর দিয়ে হয়না বলে জানান ওই ইউপি সদস্য।
জানতে চাইলে মুরাদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ- সভাপতি মোঃ মিজানুর রহমান শিকদার বলেন, শারীরিক অসুস্থতার কারণে ছুটিতে রয়েছেন। কিছুদিনের মধ্যেই তিনি কার্যালয়ে ফিরবেন।
তবে সরকার পদত্যাগের পরপরই তাঁর বসতবাড়িতে দুষ্কৃতকারীরা হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে। আংগারিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সহ- সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ গোলাম মর্তুজা শুক্কুর নিরাপত্তাহীনতার বিষয়ে বলেন, তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন না। তবে আগামী কর্মদিবসে কার্যালয়ে আসবেন।
পাঙ্গাশিয়া ইউপি চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গাজী নজরুল ইসলাম বলেন, তিনি এলাকায় আছেন, কিছু দিন তিনি বিভিন্ন এলাকায় ছিলেন। নিজস্ব কার্যালয় না থাকায় তিনি সুবিধা জনক স্থানে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।
এ বিষয়ে তিনি এলাকার নেতৃবৃন্দের সাথে সমন্বয় করে চলছেন। লেবুখালী ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সিরাজুল ইসলাম তুহিন জানিয়েছেন, সরকার পতনের পর তাঁর কার্যালয়ে দুর্বৃত্তরা ভাঙচুর চালিয়েছে এমনকি তাঁর বসতবাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়েছে। তার আপন ভাইকে গুরুতর জখম করা হয়েছে।
নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়েছেন বলে জানান ওই চেয়ারম্যান। দুমকী উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. খলিলুর রহমান বলেন, আমরাতো চেয়ারম্যানদের নিরাপত্তা দিতে পারবোনা, নিরাপত্তা দিবেন প্রশাসন।
তবে প্রশাসন আমাদের সহযোগিতা চাইলে আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করবো। দুমকী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো শাহীন মাহমুদ জানান, তিনি নিয়মিত খোঁজ খবর রাখছেন।
অনলাইন কার্যক্রম চালু রয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে উপজেলা পরিষদের কার্যক্রমের বিষয়ে নির্দেশনা থাকলে ও ইউনিয়ন পরিষদের বিষয়ে কোন নির্দেশনা পাওয়া যায়নি। কোন কোন চেয়ারম্যানের নিরাপত্তাহীনতার বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে জানিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশ জনপদ
Leave a Reply