শুক্রবার, ২০ Jun ২০২৫, ০৬:৫১ পূর্বাহ্ন
বানারীপাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধিঃ বরিশালের বানারীপাড়ায় উপজেলা বিএনপি’র যুগ্ন আহবায়ক ও বাইশারী ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারন সম্পাদক সবুর মেম্বরের বিরুদ্ধে উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের
দত্তপাড়া গ্রামের সাতআনিতে মোকাদ্দামা বিচারাধীন হিন্দু সম্প্রদায়ের ভোগ দখলীয় সম্পত্তিতে থাকা ৫০/৬০ বছর
পূর্বের তাদের পূর্ব পুরুষদের রোপনকৃত অর্ধ কোটি টাকার গাছ একের পর এক কেটে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে প্রতিকার ও বিচার চেয়ে ওই জমির শরিকদার ভুক্তভোগী দীপক ভৌমিক ওরফে সাহা ও গিরিধারী
ভৌমিক ওরফে সাহা বাদী হয়ে বরিশাল জেলা প্রশাসক, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা,
বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি, অতিরিক্ত ডিআইজি,বরিশাল সেনা ক্যাম্পের ইনচার্জ,
বরিশাল জেলা পুলিশ সুপার ও বানারীপাড়া থানা অফিসার ইনচার্জ বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে,দীপক ভৌমিক ওরফে সাহা, গিরিধারী ভৌমিক ওরফে সাহা,
ডা: উত্তম কুমার সাহা সহ অন্যান্য শরিকরা বংশ পরস্পরায় প্রায় ২৫০ বছর ধরে ওয়ারিশ সূত্র মালিক দখিলদার বিদ্যমান আছেন।
তাদের উক্ত জমি নিতান্ত ভুলের কারণে ভিপি ক তালিকাভূক্ত হয়।
তারা উক্ত ভিপি ক তালিকাভুক্তির বিরুদ্ধে বরিশাল বিজ্ঞ জেলা জজ আদালতে অর্পিত মোকাদ্দামা দায়ের করেন।
উক্ত মোকদ্দামাটি বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। গত ১৪ জানুয়ারি পার্শ্ববর্তী গরদ্দার গ্রামের সবুর খান ও তার
৩০/৪০ জনের একটি দল নিয়ে ওই সম্পত্তিতে থাকা তাদের পূর্ব পুরুষদের রোপনকৃত ৫০-৬০ বছরের
পুরোনো গাছ কাটতে গেলে সেখানে বসবাসকারী হিন্দু সম্প্রদায়ের শরিকরা
এতে বাধা প্রদান করলে সবুর মেম্বার ওই সম্পত্তি তার ছেলে মারুফ খানের নামে সরকারের কাছ থেকে লিজ
নিয়েছেন বলে জানান এবং তার বাহিনী নিয়ে এ সময় হিন্দু সম্প্রদায়ের ওই বাধাদানকারী পরিবারগুলোকে অকথ্য
ভাষায় গালিগালাজ করে এবং হুমকি ধমকি দিয়ে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেয়।
বাধাদানকারী পরিবারগুলোকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং খুন জখমের হুমকি ধামকি দিয়ে পরিবেশ
আতঙ্কিত করে সেখান থেকে বসবাসকারী হিন্দু সম্প্রদায়কে তাড়িয়ে দেয়।
তারা প্রাণের ভয়ে সেখান থেকে চলে যায়। পরে সবুর মেম্বারের লোকজন গাছ কাটতে শুরু করে এবং অদ্যবধি পর্যন্ত গাছ কাটা অব্যাহত রয়েছে।
এক একটি গাছের মূল্য প্রায় ৮০ হাজার টাকা থেকে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত রয়েছে বলে ভুক্তভোগীরা জানান।
এ ব্যাপারে ওই ভুক্তভোগীরা বানারীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: বায়েজিদুর রহমানের কাছে প্রতিকার চেয়ে বিষয়টি অবহিত করলে ও তিনি গাছ কাটার বিষয়ে কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেননি।
ভুক্তভোগী হিন্দু পরিবারগুলো অভিযোগে জানান, লিজ সংক্রান্ত কোন শরিকি নোটিশ ও পাননি তারা।
ওই সম্পত্তিতে বেশ কয়েকটি পরিবার বসবাস করছেন। সেখানে বেশ কয়েকটি মন্দির,অগনিত সমাধি এবং ভবন ও রয়েছে।
এমনকি ১৯৮০ সালে রামুতে শান্তি বাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্দ্বে শহীদ সৈনিক আদিত্ত্ব সাহার সমাধি ও রয়েছে সেখানে।
সবুর মেম্বর ও তার বাহিনীর ভয়ে আতংকে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে সেখানে বসবাসরত হিন্দু পরিবারগুলো।
তারা এ ব্যাপারে প্রশাসনের সহযোগীতা কামনা করেছেন।এ ব্যাপারে বানারীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: বাইজিদুর রহমান জানান, তিনি এ ব্যাপারে মৌখিক শুনেছেন এবং বিষয়টি বাইশারি ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তাকে তদন্ত করে জানানোর জন্য বলেছেন।
তিনি আরো জানান, সবুর মেম্বার সরকারি কোষাগারে টাকা জমা দিয়ে মুগডাল লাগানোর অনুমতি নিয়েছেন মাত্র।
সেখান থেকে কোন গাছ কাটা বৈধ নয়। এছাড়া সেখানে কোন শ্মশান বা মন্দির থেকে থাকলে সেটা দেবত্ব সম্পত্তি হিসেবে গণ্য হবে বলে ও তিনি জানান।
এদিকে ৫ আগস্টের পরিবর্তনের পরে সবুর মেম্বার একের পর এক বিতর্কিত কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন যাতে করে অনেক বিএনপি নেতাকর্মীরাও বিব্রত বোধ করছেন।
৫ই আগস্ট আওয়ামী লীগের পতনের পরে ৬ আগস্ট সবুর মেম্বরের এর নেতৃত্বে বানারীপাড়া খেয়াঘাট দখলের অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়া তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপজেলা পর্যায়ের এক বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকে মসজিদের মধ্যে অহেতুক মারধরের অভিযোগ রয়েছে।
এমনকি ওই নেতাকে মারধরের পর সবুর মেম্ববের বিরুদ্ধে বানারীপাড়ায় একটি মানববন্ধন হওয়ার সময় সেখানেও সবুরের নেতৃত্বে প্রকাশ্যে হামলা করা হয়েছিল।
এ সময় মানববন্ধনকারীরা ভয়ে বানারপাড়া থানার ভিতরে আশ্রয় নিলে সেখানেও লাঠি সোটা নিয়ে প্রকাশ্যে সবুর মেম্বর তাদের উপর হামলা চালিয়েছিলো।
যা বানারীপাড়া থানার সিসি ফুটেজ দেখলে তার ভয়ংকর রূপ দেখা যাবে।
এছাড়াও সবুর খান রাতের আধারে বানারীপাড়া ফেরি ঘাট সংলগ্ন নদীর চর বালু ভরাট করে প্রায় ৪৫ শতাংশের একটি সরকারি জমি দখল করে সেখানে নিজের নামে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেয়।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান ও স্থানীয় বিএনপির প্রতিনিধি এস সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টু সাহেবের কঠোর নির্দেশনা সত্বেও সবুরের এমন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে বিএনপির ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুন্ন হচ্ছে বলেও মনে করেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক বিএনপি নেতা কর্মী।
তারা এ ব্যাপারে বিএনপি’র উর্ধাতন নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
বাংলাদেশ জনপদ
Leave a Reply