রবিবার, ১৩ Jul ২০২৫, ০৬:২৫ পূর্বাহ্ন
উজিরপুর প্রতিনিধিঃ বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলার সাতলা ইউনিয়নের মুড়িবাড়ি এলাকায় বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে সন্ত্রাসীদের হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনার প্রতিবাদে ১৪ জুন শনিবার দুপুরের পর থেকে স্থানীয় ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা প্রায় ২০০-২৫০ জনের একটি বিশাল মোটরসাইকেল বহর নিয়ে মুড়িবাড়ির কার্যালয়, উত্তর সাতলার বাসতলা ও জনতা বাজারে প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিল করেন।
প্রথমে হামলার শিকার মুড়িবাড়ি অফিসের সামনে নেতাকর্মীরা জমায়েত হন। সেখানে কিছুক্ষণ স্লোগান ও প্রতিবাদী বক্তব্যের পর তারা বিশাল বহর নিয়ে রওনা হন সালতা বাজার ও উত্তর সাতলার বাসতলা মোড়ের দিকে। সেখানে দ্বিতীয় দফা প্রতিবাদ সমাবেশ হয়। এরপর উত্তর সাতলার জনতা বাজারেও মিছিল গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে। সবশেষে তারা আবার বাসতলা মোড়ে ফিরে এসে প্রতীকী অবস্থান শেষে সাতলার মুড়িবাড়িতে ফিরে এসে কিছু সময়ের জন্য অবস্থান নেয় এবং পরে সুশৃঙ্খলভাবে এলাকা ত্যাগ করে।
এ কর্মসূচিতে সাতলা ইউনিয়নের স্থানীয় নেতাদের পাশাপাশি উজিরপুর উপজেলা পর্যায়ের নেতারা অংশগ্রহণ করেন। দলীয় কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুর ও চুরি হওয়া জিনিসপত্র ঘুরে দেখতে আসেন
উজিরপুর উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মনিরুজ্জামান লিখন, উজিরপুর উপজেলা পৌর যুবদলের আহ্বায়ক মোঃ শাহাবুদ্দিন আকন সাবু, উপজেলা মৎস্যদলের সাবেক সভাপতি আলম ফকির, পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সোহেল সিকদার,
উজিরপুর উপজেলা জিয়া মঞ্চের সভাপতি মোঃ নজরুল ইসলামসহ আরো অনেকে। তারা হামলার স্থান ঘুরে দেখার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন এবং এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দিতে গিয়ে মোঃ শাহাবুদ্দিন আকন সাবু বলেন, “এই হামলা কেবল একটি অফিস নয়, গোটা বিএনপির অস্তিত্ব ও আদর্শের উপর আঘাত। যারা ভেবেছে হামলা করে আমাদের স্তব্ধ করে দেবে, তারা বোকার স্বর্গে বাস করছে। আমরা ঘরে বসে থাকব না। রাজপথেই জবাব দেওয়া হবে।”
মনিরুজ্জামান লিখন বলেন, “প্রতিপক্ষ বুঝে ফেলেছে—বিএনপি আবার ঘুরে দাঁড়াচ্ছে, সেখানেই তাদের ভয়। তাই ঘের প্রকল্প ও সংগঠনের কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত করতেই এই বর্বর হামলা চালানো হয়েছে। কিন্তু আমাদের থামানো যাবে না। আমাদের শান্তি নষ্ট করতে আসবেন না।
তাহলে আপনারা বিগত ১৭ বছর মানুষের সাথে অন্যায়ভাবে যা যা করেছেন, তার পুনঃরাবৃত্তি হবে। তাই, আপনারা আমাদের শান্তি নষ্ট করার চেষ্টা করবেন না, আপনারা ভালো থাকুন, আমাদেরও ভালো থাকতে দিন।”
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন অনেকেই। সবাই একবাক্যে বলেন—“এটা প্রতিক্রিয়ার সময় নয়, প্রতিরোধের সময়। হামলা হলে পাল্টা প্রতিরোধ হবে। সাতলায় বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করা যাবে না।”
এ সময় বিক্ষোভে উপস্থিত ছিলেন সাতলা ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাঞ্চন মোল্লা, আনোয়ার মিয়া, উজিরপুর উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব পনির খাঁ, ওটরা ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ কামরুজ্জামান টুলু, ৯নং ওয়ার্ড সাতলা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আঃ ছত্তার পাইক, ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি জিয়াবুল মোল্লা,
সাতলা ইউনিয়ন ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ রাহাত খন্দকার, কৃষকদল নেতা মোঃ ইউনুস বিশ্বাস, যুবদল নেতা আতিয়ার হাওলাদার, মোঃ মোস্তফা সরদার, মোঃ সরোয়ার সরদার, শাহাদাত বিশ্বাস, এবং কাজি শিপলু (উপস্থিত) সহ শত শত নেতাকর্মী।
তিনটি স্থানেই অনুষ্ঠিত এই প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বারবার এক কথাই বলেছেন—“এটা পূর্বপরিকল্পিত হামলা। কিন্তু এবার আর ছাড় নয়—এই সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। প্রয়োজনে ভবিষ্যতে আরো কঠোর কর্মসূচী পালন করা হবে।”
সাম্প্রতিক সময়ে সাতলায় বিএনপির কার্যক্রম আবার সচল হওয়ায় একটি চিহ্নিত গোষ্ঠী ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে।
এই গোষ্ঠী অতীতে বারবার দমননীতি অবলম্বন করলেও, এবার যে বিক্ষোভের মাত্রা ও জনসমর্থন তারা দেখেছে, তা বিএনপির ঘুরে দাঁড়ানোর প্রমাণ বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় নেতারা।
বাংলাদেশ জনপদ
Leave a Reply