শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৩৬ অপরাহ্ন
বাংলাদেশ জনপদ ডেস্কঃ র্যাব-৮, সিপিসি-৩, মাদারীপুর কর্তৃক অভিযান পরিচালনা করে বিভিন্ন প্রকার দেশীয় অস্ত্র ও ডাকাতির সরঞ্জামাদিসহ আন্তঃজেলা ডাকাত দলের কুখ্যাত ডাকাত সরদার মেহেদী হাসান ও বরিশাল জেলা যুবদলের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল হক সহ মোট ০৪ জন দুর্ধর্ষ ডাকাত সদস্য গ্রেফতার।
২৯ জুন শনিবার আনুমানিক সন্ধ্যা ৭ টার দিকে এই সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্র গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা থেকে একজন ব্যক্তিকে টার্গেট করে সেই ব্যক্তিকে ময়মনসিংহে তার বাড়িতে পৌছে দেবার কথা বলে যাত্রী হিসেবে তাকে ডাকাত চক্রের ব্যবহৃত মাইক্রোবাসে তুলে নেয়।
উল্লেখ্য যে, সেই মাইক্রোবাসে আগে থেকেই ডাকাত চক্রের অন্যান্য সদস্যরা যাত্রী বেশে অবস্থান করছিল।
পরবর্তীতে তাদের পরিকল্পনা মাফিক রাজেন্দ্রপুর চৌরাস্তা পেরিয়ে ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের নির্জন একটি স্থানে নিয়ে অস্ত্রের মুখে প্রথমে তার সর্বস্ব কেড়ে নেয়।
এরপর তারা অপহৃত ব্যক্তির বাড়িতে ফোন করে মুক্তিপণ হিসেবে নগদের মাধ্যমে আরও ৫০০০০ টাকা আদায় করে।
এই কার্যক্রম শেষে ডাকাত দল ময়মনসিংহের ভরাডোবা এলাকাযর নির্জন একটি স্থানে অপহৃত ব্যক্তির হাত পা বেঁধে ফেলে রেখে চলে যায়।
পরবর্তীতে এই চক্র ২ জুলাই দুপুরে বেনাপোল বন্দর থেকে ঠিক একইভাবে দুইজন বিদেশফেরত যাত্রীকে টার্গেট করে। ডাকাত দলের একজন সদস্য সেই যাত্রী দু’জনের সাথে একটি পাবলিক বাসে সাধারণ যাত্রী হিসেবে অবস্থান নেয়।
অন্যদিকে ডাকাতের অন্যান্য সদস্যরা তাদের ব্যবহৃত একটি প্রাইভেট কার নিয়ে বাস টিকে অনুসরণ করে।
অন্যদিকে এই ডাকাত চক্রের আরেকটি দল একটি নোয়া মাইক্রোবাস নিয়ে ঢাকা গোপালগঞ্জ মহাসড়কের পাশে সাম্পান নামক একটি হাইওয়ে রেস্তোরার কাছাকাছি স্থানে আইন শৃংখলা বাহিনীর পরিচয়ে বাসটির গতি রোধ করে এবং তাদের টার্গেট করা দু’জন প্রবাসী যাত্রীদু’জনকে সেই যাত্রীবেশী ডাকাত সদস্যের সহায়তায় বাস থেকে নামিয়ে নিজেদের ব্যবহৃত মাইক্রোবাসে তোলে।
ডাকাত চক্রটি অপহৃত ব্যক্তিদের নিয়ে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে আসার পর তাদের কাছ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা সহ একটি ব্যাগ ও অন্যান্য মালামাল লুট করে এবং তাদেরকে হাত পা বেধে রাস্তায় ফেলে দেয়।
এরপর তারা বরিশাল-মাদারীপুর মহাসড়কের রাজৈর এ একটি হাইওয়ে রেস্তোরাঁয় যাত্রা বিরতি করে লুটকৃত মালামাল নিজেদের মধ্যে বন্টনের পরিকল্পনা করে।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব ৮, সিপিসি ৩ এর একটি আভিযানিক দল তাতক্ষনিকভাবে উক্ত স্থানে পৌছালে তারা র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে এদিক ওদিক পালানোর চেষ্টা করলে দলনেতা মেহেদীসহ ০৪ জনকে (১। মেহেদী হাসান (৪০), গ্রাম: মশুরিয়া, থানা: বিমানবন্দর, জেলা: বরিশাল, ২। সাইফুল ইসলাম (২৮), গ্রাম জলিসা, থানা: দুমকী, জেলা: পটুয়াখালী, ৩। মো: ওমর ফারুক (৩৬), গ্রাম: দক্ষিণ বাদুড়া, থানা পটুয়াখালী সদর, জেলা পটুয়াখালী, ৪। মো: রেজাউল হক (৪০), গ্রাম: নতুল্লাবাদ, থানা: বিমানবন্দর জেলা: বরিশাল।
র্যাব আটক করে এবং বাকি তিনজন পালিয়ে যায়। র্যাব কর্তৃক ঘটনাস্থল থেকে এই চক্রের ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাস ও একটি প্রাইভেট কার এবং বিভিন্ন প্রকার দেশীয় অস্ত্র ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জামাদি উদ্ধার করে।
মূলত তারা সড়ক-মহাসড়ক, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, বিমানবন্দর, বাস স্ট্যান্ড, সীমান্ত বন্দর এলাকায় ওৎ পেতে থাকে এবং তাদের নিয়জিত লোকজনের মাধ্যমে টার্গেট চিহ্নিত করে।
কোন কোন সময় তারা যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে গাড়িতে উঠায় এবং নিজেরাও যাত্রী বেশে গাড়িতে অবস্থান নেয়, অতঃপর কার্যসিদ্ধি শেষে তাদের নির্জন স্থানে ফেলে দিয়ে চলে যায়।
Leave a Reply