শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০১:০১ পূর্বাহ্ন
ববি প্রতিনিধিঃ শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভুঁইয়া। মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টায় তিনি এই পদত্যাগপত্র পাঠান।বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোঃ মনিরুল ইসলাম পদত্যাগের সত্যতা নিশ্চিত করেন।
উপাচার্যের পদত্যাগের পরেই বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টোরিয়াল বডি, চার হলের প্রভোস্ট এবং বিভিন্ন দপ্তরের পরিচালক সহ মোট ২০ জন ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণ সহ বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন।
এদিকে উপাচার্যের পদত্যাগে ক্যাম্পাসে উচ্ছ্বাসে মিষ্টি বিতরণ করতে দেখা গেছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর পাঠানো পদত্যাগপত্রে বদরুজ্জামান ভূঁইয়া ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণে স্বেচ্ছায় পদত্যাগের কথা উল্লেখ করেছেন।
জানা যায়, সকাল ১০টা থেকে উপাচার্য পদত্যাগের দাবিতে মিছিল করেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের একটি পক্ষ।একই সময়ে উপাচার্যকে স্বপদে বহাল রাখার জন্য অবস্থান কর্মসূচি নেয় শিক্ষার্থীদের আরেকটি অংশ।
পরে পদত্যাগের আল্টিমেটাম শেষ হলে সেখানে আরো বেশি জড় হতে থাকে শিক্ষার্থীরা।তার আগে প্রক্টর ড. মোঃ আব্দুল কাইউম স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে।
আল্টিমেটাম শেষে উপাচার্য বাস ভবনের গেইটে তালা ও ঘিরে রাখা হয়। একঘন্টা পরে উপাচার্যের কার্যালয়ে আসতে শুরু করলে উপাচার্য দপ্তর থেকে পদত্যাগের বিষয়টি জানানো হলে গ্রাউন্ডে অবস্থান নেয় তারা।অফিসিয়াল নোটিস পাওয়ার পরে তারা আনন্দ মিছিলে শেষ করে মিষ্টি বিতরণ করেন।
এরআগে সাড়ে ১০টায় মিটিংয়ের আহ্বান করেন উপাচার্য। উপস্থিত মিটিংয়ে ৪ জন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই প্রতিবেদককে জানান, সভায় শিক্ষকদের কারো মধ্যে তাকে নিয়ে কোনো ক্ষোভ আছে কিনা; জানতে চান উপাচার্য। কেউ এ বিষয়ে কোনো কথা না বললে তিনি সকলের কাছে ক্ষমা চান।
এসময় তিনি সাবেক এক প্রক্টরসহ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ শিক্ষকদের বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের অনেকে আমাকে স্বপদে বহাল চায়। আমি যোগদানের পর থেকেই সকলকে সঙ্গে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে কাজ করেছি। আপনারা সিনিয়র যারা আছেন তারা যদি একটু সবাইকে বুঝিয়ে বলেন তবে আমার বিরুদ্ধে যারা মাঠে নেমেছে তারা ফিরে যাবে’।
তবে জ্যেষ্ঠ শিক্ষকদের কয়েকজন উপাচার্যকে সার্বিক বিষয় বুঝিয়ে বলেন।তারা বলেন, এই মুহূর্তে আর পদ আঁকড়ে থাকা উচিত হবে না বলে পরামর্শ দেন।পরে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পদত্যাগ করেন তিনি।
শিক্ষার্থী সিহাব জানান, আমরা স্বৈরাচারী দোষরদের পদত্যাগ চেয়েছি।আমাদের শিক্ষার্থীদের প্রথমে দাবি ছিলো উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগ।সেটি সম্ভব হয়েছে।শুনেছি অনেক দপ্তরগণও পদত্যাগ করেছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, আমাদের নিরপেক্ষ একজন উপাচার্য আসুক।যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন শিক্ষক রাজনীতির সাথে জড়িত থাকবেন না। কোন রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তিক করবে না। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থাকবে স্বাধীন।কারোর কর্তৃত্ব থাকবে না। তারা সবসময় কাজ করবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের হয়ে। এমন উপাচার্য সহ কর্তৃপক্ষ চায় আমরা।
কোন ব্যক্তিগত আক্রোশ শিক্ষার্থীদের উপর যেন না বর্তায় সেদিকেও খেয়াল রাখা দরকার। উপাচার্যের স্বপদে বহাল যারা রাখতে চাইছিলো, তাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই। তাদের মতের সাথে অমিল ছিলো এটাই পার্থক্য শুধু জানায় শিক্ষার্থীরা।
বাংলাদেশ জনপদ
Leave a Reply