বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১২:৩১ পূর্বাহ্ন
চরফ্যাসন (ভোলা) প্রতিনিধিঃ ভোলার চরফ্যাসনে আসমা বেগম(২৬) নামের এক তিন সন্তানের জননী গৃহবধুকে মারধরের পর মুখে বিষ ঢেলে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীসহ তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে। বিকালে স্ত্রী আসমা বেগমকে মারধরের পর মুখে বিষ ঢেলে দেন স্বামী আজাদ মাঝিসহ তার পরিবারের সদস্যরা। পরে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যায় নেমে এলে গৃহবধুর অবস্থার বেগতিক দেখে তাকে চরফ্যাসন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সে নিয়ে আসেন।
রাত ৮ টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই গৃহবধু মারা গেলে স্ত্রী মরদেহ হাসপাতালে বেডে রেখে পালিয়ে যান পাষন্ড স্বামী আজাদ মাঝি।
পরে রাতেই শশীভূষণ থানা পুলিশ নিহত ওই গৃহবধুর মরদেহ উদ্ধার করে বুধবার সকালে ময়না তদন্তের জন্য ভোলা মর্গে পাঠিয়েছেন।
( ৬ ই ফেব্রুয়ারী) মঙ্গলবার বিকালে জাহানপুর ইউনিয়নের ওমরাবাজ গ্রামের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে স্বামী আজাদ হোসেন মাঝির বসত বাড়িতে এঘটনা ঘটে।
নিহত গৃহবধু শশীভূশণ থানার এওয়াজপুর ইউনিয়নের পশ্চিম এওয়াজপুর গ্রামের আবদুর রশিদ ঢ়ারির মেয়ে।
নিহতের বৃদ্ধ মা জাহানারা বেগম জানান, ১২ বছর আগে জাহানপুর ইউনিয়নের ওমরাবাজ গ্রামের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সিদ্দিক মাঝির ছেলে আজাদ হোসেন মাঝির সাথে পারিবারিক ভাবে মেয়ে আসমার বিয়ে হয়।
তাদের ঘরে তিন কন্যা সন্তান রয়েছে। তৃতীয় কন্যা সন্তান জম্ম হওয়ার পর থেকেই জামাতা আজাদ তার মেয়ে আসমাকে নানান অজুহাতে প্রায় সময় মারধর করতো।
মঙ্গলবার বিকেলে পানি খাওয়ার বাটি পরিস্কার করতে দেরি হওয়ায় মেয়েকে জামাতা বেদড়ক মারধর করেন। পরে সন্ধ্যার আগে মেয়ে তাকে মারধরের ঘটনাটি মুঠোফোনে জানিয়েছেন।
পরে রাতে জামাতা আজাদ তাকে ফোন করে জানান তার মেয়ে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেছেন।
জামাতার খবরে তিনি চরফ্যাসন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখেন হাসপাতালে বেডে পরে আছে মেয়ের নিথর দেহ। মাথার কাছে বসে আছে চার বছর বয়সী নাতিন সামিয়া।
নিহতের ভাই জসিম উদ্দিন অভিযোগ করেন, আজাদ তার বোনকে প্রায় সময় মারধর করতো এবং টাকা চাইতেন।
তিনি দিনমজুরী কাজ করে সাদ্যমতো টাকা দিতেন বোনের স্বামীর হাতে। মঙ্গলবার বোন জামাতা আজাদ আসমাকে মারধর করে মুখে বিষ ঢেলে দেন।
পরে অবস্থার বেগতিক দেখে তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন।রাত ৮টায় বোন আসমা মারা গেলে তার মরদেহ হাসপাতাল রেখে পালিয়ে যান তিনি। পরে খবর পেয়ে শশীভূষণ থানা পুলিশ বোনের লাশ থানায় নিয়ে যান।
গৃহবধুর শিশু কন্যা সামিয়া জানান, বাবা তার মাকে লাঠি দিয়া পিটাইছে। পরে মা ঘুমাইয়া গেছে। মাকে ডাকছি মা উঠে নায়।
ঘটনার পরপরই ঘাতক স্বামী আজাদ মাঝিসহ তার পরিবারের সদস্যরা পালিয়ে যাওয়ার তাদের বক্তব্য জানা যায়নি।
শশীভূষণ থানার ওসি ম. এনামূল হক জানান, বিষক্রিয়ার তার মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা হচ্ছে।
হাসপাতাল থেকে নিহত গৃহবধুর মরদেহ উদ্ধার করে বুধবার সকালে ময়না তদন্তের জন্য ভোলা মর্গে পাঠিয়েছেন। ময়না তদন্তের রির্পোট পেলে মৃত্যুর আসল কারন জানা যাবে।
Leave a Reply