মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৩৯ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
বাবুগঞ্জে পালাক্রমে শিশু ধর্ষন অতপর থানায় মামলা গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া প্রধান সড়কের পাশে সরকারি জায়গা দখল, এলাকা বাসীর মাঝে উত্তেজনা আশুলিয়া যৌথ বাহিনীর অভিযানে জেলা কৃষক দলের সদস্য সচিবসহ আটক ৮ রাজাপুরে জমি জমা বিরোধে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখমের অভিযোগ গণঅধিকার পরিষদ গনমানুষের অধিকার আদায়ের দল গৌরনদীতে -ভিপি নুর উজিরপুরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর গন-সমাবেশ অনুষ্ঠিত  উজিরপুরে জোড়া খু*নের ঘটনায় প্রধান আসা*মী কিবরিয়া র‍্যাব এর হাতে গ্রেফ*তার  পটুয়াখালীর বাউফলে ইউপি প্যানেল চেয়ারম্যান পদ নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপে মারামারি নলছিটির দপদপিয়ায় বিএনপি নেতা রিমনের চাদাঁবাজী-দখল বানিজ্যে অতিষ্ঠ সাধারন মানুষ উজিরপুর ব্লাড ডোনেট ক্লাবের কমিটি গঠন, সভাপতি ইসমাইল, সম্পাদক জহিরুল
বাবুগঞ্জের মাধবপাশা চন্দ্রদ্বীপ হাই স্কুল এন্ড কলেজ অধ্যক্ষে পদত্যাগ চেয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

বাবুগঞ্জের মাধবপাশা চন্দ্রদ্বীপ হাই স্কুল এন্ড কলেজ অধ্যক্ষে পদত্যাগ চেয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

বিশেষ প্রতিনিধিঃ বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার মাধবপাশা চন্দ্রদ্বীপ হাই স্কুল এন্ড কলেজ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, অসাদাচরণ, স্বজনপ্রীতি, নিয়োগ বাণিজ্য, উন্নয়নের নামে অর্থ লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে।

জেলা প্রশাসনকে ‘তোয়াক্কা’ না করে বছরের পর বছর অনিয়ম ও দুর্নীতি করে আত্মসাৎ করেছেন কয়েক কোটি টাকা।

 

সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ সরকার আমলে ভয়ঙ্কর ক্ষমতার অধিকারী বনে যান অধ্যক্ষ প্রনব কুমার বেপারি।

তার ক্ষমতা ও আধিপত্য’র কারণে বছরের পর বছর ভোগান্তির শিকার হয়েছে শিক্ষার্থী, অভিভাবক, অধিনস্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

তার রোষানল থেকে বাদ পরেনি শিক্ষকরাও। অনিয়ম, দুর্নীতি, অর্থলোপাট, স্বজনপ্রীতি, শিক্ষার্থী নির্যাতন সহ নানা অপকর্ম করলেও এতদিন তার ভয়ে মুখ খুলতে পারে নি কেউ।

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর প্রনব কুমার বেপারির বিরুদ্ধে একের পর এক দুর্নীতির তথ্য বেড়িয়ে আসতে শুরু করে।

তার পদত্যাগ’র দাবীতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সমর্থন জানায় স্থানীয় জনগণ ও অভিভাবকবৃন্দ।

এমনকি শিক্ষার্থীদের প্রতি অমানবিক আচরণের কারণে প্রনব কুমার বেপারি রীতিমত এক আতঙ্কের নামে পরিণত হয়েছে।

প্রনব কুমার বেপারি ২০০৫ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত মাধবপাশা চন্দ্রদ্বীপ হাই স্কুল এর প্রধান শিক থাকলেও তিনি নিজেকে ‘অধ্য’ বলে পরিচয় দিতেন।

ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে নিজের অধিপত্য বিস্তার করে রেখেছিল প্রায় দুই যুগ।

এমনকি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরাও তার বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহস পেতো না।

তবে সরকারের পতনের পর পরই তার পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে সকল শিক্ষার্থী ও স্থানীয় জনগন।

প্রনব কুমার বেপারির বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে সরেজমিন অনুসন্ধানে উঠে আসে দুর্নীতির চাঞ্চল্যকর তথ্য।

গত কয়েক বছর ধরে প্রতিষ্ঠানে বহিরাগত সন্ত্রাসী এনে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ভয়ভীতি দেখাতো, মারধর করতো। ক্রমেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিকে নিজের সম্পত্তি বানিয়ে ফেলেছেন।

স্বনামধন্য এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ক্রমেই হারাতে থাকে খ্যাতি।

তার ভাগনী জামাই জীবন কৃষ্ণ বেপারীকে স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে চাকরীর বন্দোবস্ত করেন। অর্থনীতির শিক্ষক মৃদুল কান্তি বিশ্বাস (সুমন) প্রনবের ভাগিনা।

এই দুই জনের নিয়োগের জন্য সাড়ে ১৬ লাখ টাকা নিয়েছে বলে বিশ্বস্ত এক সূত্র জানিয়েছে। এ বিষয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক জীবন কৃষ্ণ বেপারী টাকা দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করলেও টাকার পরিমান কৌশলে এড়িয়ে যান।

তিনি বলেন, আমি কত দিয়েছি, কি দিয়েছি সেটা তো আমি আর প্রনব স্যার জানি, আপনারা জানলেন কিভাবে?

সূত্র মতে, ল্যাব সহকারীর অঞ্জন বিশ্বাসের নিয়োগের জন্য নেয়া হয়েছে ৬ লক্ষ টাকা ঘুষ বাণিজ্য রীতিমত ‘ওপেনসিক্রেট’।

প্রনব কুমার এর আমলে ২০০৫ সাল থেকে এ প্রতিষ্ঠানে প্রায় প্রতিটি নিয়োগে মোটা অংকের ‘ঘুষ’ বাণিজ্য হয়েছে বলে একাধিক সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিশ্চিত করেছে।

অপরদিকে, প্রতিষ্ঠানটির অবকাঠামোগত উন্নয়নের নামে কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে প্রনব কুমারের বিরুদ্ধে।

যে সকল শিক্ষক বা শিক্ষার্থীরা তার দুর্নীতির বিরুদ্ধে মুখ খুলতেন তাদের নানা অজুহাতে বরখাস্ত বা বহিরাগতদের দিয়ে নির্যাতন চালাতেন, মারধর করাতেন। এ নিয়ে প্রনব কুমারের বিরুদ্ধে কয়েক বার আন্দোলন হয়েছিল।

আ.লীগ নেতাদের ছত্রছায়ায় থাকার কারণে প্রনব কুমারের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে পারতো না সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা রিয়াজ সরদার বলেন, প্রনব কুমারের বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত নেই। ২০০৫ সাল থেকে তিনি একাধিক শিক্ষার্থীকে অযথা শারীরিক নির্যাতন করতেন। তুচ্ছ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের পিটিয়ে গুরুতর আহত করার ঘটনা ঘটেছে অহরহ।

ওই এলাকার হানিফ তালুকদার বলেন, ২০১৬ সালে পরীক্ষার ফি না দিতে পাড়ায় এক শিক্ষার্থীকে পরীক্ষা দিতে না দিয়ে স্কুল থেকে বের করে দেয় প্রনব কুমার। অপমান সহ্য করতে না পেরে ওই শিক্ষার্থী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। এ ছাড়াও খেলাধুলার নামে চাঁদা উঠিয়ে টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

প্রনব কুমারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগে বিষয়ে মাধবপাশা চন্দ্রদীপ হাই স্কুল এন্ড কলেজে এর ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি দুলাল কাজী বলেন, আমি দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে তার বিরুদ্ধে কয়েক বার শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেছে। পরে শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে কাসে পাঠানো হয়েছে।

এ বিষয়ে প্রনব কুমার জানান, আমি কোন দুর্নীতি করি নাই। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গত পাঁচ তারিখ থেকে আমি অসুস্থ তাই প্রতিষ্ঠানে আসতে পারি নাই। তবে তার ছুটির কোন দরখাস্ত প্রতিষ্ঠান বা সভাপতির কাছে নাই।

এ দিকে, প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের দাবী তারা কোন দুর্নীতিবাজকে অধ্যক্ষের দেখতে চায় না। ২৪ ঘন্টার মধ্যে প্রনব কুমারের পদত্যাগের দাবী জানিয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্রআন্দোলনের সমন্বয়কদের হস্তক্ষেপ কামনা করে শিক্ষার্থীরা। শীঘ্রই তারা জেলা প্রশাসক কার্যলয়ের সামনে বিক্ষোভ করে তাদের এক দফা দাবী পেশ করবে বলে জানিয়েছে।

বাংলাদেশ জনপদ

সংবাদ টি ভালোলাগলে আপনার বন্ধুদের সাথে সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Categories